একটি প্রজন্মের একাংশ আজ এমন এক অবস্থানে পৌঁছেছে, যেখানে রাজনৈতিক মতাদর্শের কাছে তারা তাদের বিবেক, পারিবারিক মূল্যবোধ, এমনকি ন্যূনতম নৈতিক বোধটুকুও বিসর্জন দিয়েছে। ভালোকে ভালো বলা, খারাপকে খারাপ বলা—এই মৌলিক নৈতিক অবস্থানটুকুও তারা হারিয়ে ফেলেছে।
যে কোনো বিষয় তাদের রাজনৈতিক বিশ্বাসের বাইরে গেলেই সেটাকে নিয়ে ব্যঙ্গ, বিদ্রুপ, তাচ্ছিল্য—করাকে যেন এক প্রকার ট্রেন্ড বানিয়ে ফেলেছে। নিজের আদর্শের সত্য-মিথ্যা বিশ্লেষণের চেয়ে, অন্যের আদর্শকে আক্রমণ করাই যেন তাদের প্রধান দায়িত্ব। নৈতিকতাকে জলাঞ্জলি দিয়ে তারা এমন এক অন্ধ মোহে ছুটছে, যার গন্তব্য কেবলই ক্ষমতা। অথচ তারা ভুলে যাচ্ছে—এই ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। পৃথিবীর কোনো ক্ষমতাই স্থায়ী নয়। একদিন সবাইকেই জবাবদিহির কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। এই জীবন, এই অহংকার—সবই ক্ষণস্থায়ী।
তারা ভুলে গেছে—সবকিছুর ঊর্ধ্বে আছে ধর্ম।
রাজনীতি আমাদের অধিকার, মতাদর্শ আমাদের পছন্দ—কিন্তু ধর্ম আমাদের পরিচয়, আমাদের আত্মার শেকড়, চূড়ান্ত আত্মপরিচয়।
আজ এমন মানুষও দেখা যাচ্ছে, যারা রাজনৈতিক দল বা নেতাকে মহিমান্বিত করতে গিয়ে নিজের ধর্মকেই কটাক্ষ করতে দ্বিধা করে না। দলীয় ভাবমূর্তি রক্ষার নামে তারা নিজেদের ধর্মকে উপহাস করে, ইসলামের শিক্ষা ও প্রতীক নিয়েও ব্যঙ্গ করে। এদের কাছে মুসলমান পরিচয়ের চেয়েও বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে নির্দিষ্ট দলের কর্মী হওয়া, নির্দিষ্ট নেতার অন্ধ অনুসরণ করা।
কিন্তু ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়—যে জাতি শিক্ষা গ্রহণে অনাগ্রহী, আত্মসমালোচনায় উদাসীন এবং নীতিবোধ বিসর্জন দিয়ে মতাদর্শের বন্দিত্বকে বরণ করে নেয়, তাদের পতন অনিবার্য।
Post a Comment